রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ লকডাউনের কারণে খেয়া চলাচল বন্ধ থাকার কথা থাকলেও নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বরগুনার ১৮টি খেয়াঘাটে চলাচল করছে খেয়া। অভিযোগ উঠেছে, জরুরি প্রয়োজনে পাড়াপাড়ের জন্য আসা যাত্রীদের জিম্মি করে প্রায় ছয়গুন বেশী ভাড়া আদায় করছেন ইজারাদাররা। আর বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে তাদের পারাপার করতে হয়। তবে জেলা প্রশাসনের আশ্বাস, নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন তারা।
বরগুনা জেলা সদরের সাথে ছয়টি উপজেলার যাতায়তের একমাত্র মাধ্য নৌপথ। এর মধ্যে শুধুমাত্র পায়রা ও বিশখালী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ১৮টি স্থানে খেয়া চলাচল করে।
ইজারার শর্তমতে ভোর পাঁচটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত এই রেটে ভাড়া আদায় করতে হবে এবং অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে তার ইজারা বাতিল করার কথাও শর্তে উল্লেখ রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রথম শ্রেণির প্রায় সবগুলো খেয়াঘাটেই সরকারি বিধি নিষেধ অমান্য করে অতিরিক্ত ভাড়ায় যাত্রী পারাপার করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেয়া বরইতলা-বাইনচটকি, পুরাকাটা-আমতলী, নিশানবাড়িয়া-পাথরঘাটা, চালিতাতলী-বগী ও ফুলঝুড়ি-বদনীখালী(বামনা) এই পাঁচটি খেয়া লকডাউনের মধ্যেও নিয়মিত চলাচল করে। আর যাত্রীদের অসহায়তে¦র সুযোগ নিয়ে তাদের জিম্মি করে আদায় করা হয় অতিরিক্ত ভাড়া।
বরইতলা-বাইনচটকি খেয়াঘাটে পারাপার হওয়া যাত্রী সবুজ মিয়া বলেন, শনিবার সকালে আমি করোন পরীক্ষার জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে যাওয়ার জন্য খেয়া ঘাঁটে আসি, কিন্ত খেয়া চালক আমার কাছে ১০০ টাকা ভাড়া দাবি করে। এসময় আমার সাথে আরো কয়েকজন জরুরি প্রয়োজনে পারাপারে জন্য আসেন। প্রত্যেকের কাছ থেকেই ১০০ করে ভাড়া আদায় করে আমাদের পারাপার করা হয়’। সবুজ মিয়া বলেন, এখানের নিয়মিত ভাড়া ১৫ টাকা, কিন্ত আমাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে এভাবে গলাকাটা হয়, এটা দেখার মত কেউ কি নেই। একাধিক যাত্রীর ঠিক একই অভিযোগ। ঘাটের ইজারাদার হাসান মিয়া বলেন, আমরা কোটি টাকা দিয়ে ইজারা নিয়েছি, প্রশাসনের নিয়ম মেনেই খেয়া চালাই, লকডাউনে খেয়া বন্ধ রাখার ও সুযোগ নেই, কারণ প্রশাসনের লোকজনকে পার করতে হয়। যাত্রী পারাপার ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় প্রসঙ্গে হাসান মিয়া বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সত্য নয়, কিছু লোক জরুরি দরকারে ঘাটে আসলে আমরা এক খেয়ার ভাড়া (রিজার্ভ) নিয়ে তাদের পাড় করি।
বরগুনা জেলা পরিষদের প্রধান সহকারী হারুন অর রশিদ বলেন, লকডাউনের বিধিনিষেধ সম্পর্কিত একটি চিঠি প্রত্যেক ইজারাদারকই দেয়া হয়েছে। জেলা প্রসানের সিদ্ধান্তেই খেয়াঘাট পরিচালনা হয়। কেউ শর্ত বা নিয়ম না মানে এদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।
এবিষয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে আমরা খেয়াঘাটে একাধিক অভিযান পরিচালনা করছি। এখনো সে অভিযান অব্যহত আছে। কেউ যদি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে খেয়া চালায় তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমি নির্বাহী ম্যজিষ্ট্রেটদের নিয়োজিত করেছি।
Leave a Reply